
খাটের নিচে স্ত্রীর মরদেহ লুকিয়ে রেখে লাপাত্তা হয়েছেন প্রবাসী স্বামী। ঘটনার পর টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌর শহরের ঘাটান্দি গ্রামের গণেশ মোড়ে একটি পাঁচতলা ভবনের তৃতীয় তলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
১৬ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার রাতে পৌর শহরের ঘাটান্দি গ্রামের গণেশ মোড়ে একটি পাঁচতলা ভবনের তৃতীয় তলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তাঁরা ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
নিহত গৃহবধূর নাম মুনিয়া ইসলাম (৩২)। তিনি পার্শ্ববর্তী উপজেলা গোপালপুরের বাগুয়াটা গ্রামের আজমত আলীর ছেলে মোস্তাক আহমেদের স্ত্রী এবং একই উপজেলার নলিন বাজারের নুরল ইসলামের মেয়ে। মোস্তাক-মুনিয়া দম্পতির ১০ ও ৪ বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে। স্বজনদের ধারণা, মুনিয়া ইসলামকে গলা টিপে বা শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা বলছে, মোস্তাক আহমেদ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্রুনাই থেকে দেশে ফেরেন। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ হতো।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে একই রুমে শুয়ে পড়েন তাঁরা। তাঁদের বড় ছেলে এদিন তার খালার বাসায় ছিল। পরে রাতের কোনো এক সময় মুনিয়াকে হত্যা করে ঘরের বক্স খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন স্বামী মোস্তাক। পরে শুক্রবার ভোরে বাসার মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। সকালে ছোট শিশুটি ঘুম থেকে উঠে কাউকে না পেয়ে ডাক-চিৎকার করলেও আশপাশের কেউ বা কোনো ভাড়াটিয়া এগিয়ে যায়নি। পরে বাসার কেয়ারটেকার বাসার দরজা খুলে দেন।
এদিকে মুনিয়া ইসলামের খোঁজ না পেয়ে বাসার বিভিন্ন রুমে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন স্বজনেরা। একপর্যায়ে ছোট ছেলেটি বক্স খাটের নিচে দেখতে বলে। পরে বক্স খাটের পাটাতন খুলে মুনিয়ার মরদেহ দেখতে পায় তারা।
নিহত মুনিয়া ইসলামের ভাই আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা চলছিল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। পরে আমাদের বড় বোন নাসরিন আক্তার কয়েক দিন আগে দুজনকে বুঝিয়ে মীমাংসা করে দিয়েছিলেন। এরপর আর কিছু জানি না। সন্ধ্যায় খবর পেলাম বোনের মরদেহ বাসার বক্স খাটের নিচে রেখে দেওয়া হয়েছে। ওর স্বামী মোস্তাক পালিয়েছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে এবং সুরতহাল শেষে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুনিয়া ইসলামের স্বামী মোস্তাক আহমেদ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’
এসইউ